আজ ২৫ নভেম্বর মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে শিবচরে সম্মুখ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করেছিলেন।
এ যুদ্ধে চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। আর ১৮ জন হানাদারসহ তাদের দোসররা নিহত হন। এ যুদ্ধে অংশ নিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলার দুই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারও নিহত হন।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের মে মাসে পাক হানাদার বাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে দুই দফা শিবচরের ৩০ জন নিরীহ নারী-পুরুষকে হত্যাসহ ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় থানায় ঘাটি গাড়ে।
১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা শিবচর বাজারে অবস্থিত হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেন। এরপর থেকেই হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা খুন, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও বাড়িয়ে দেন।
২৪ নভেম্বর রাত ৩টায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাসহ ভাঙ্গা ও সদরপুর থানার মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের আশ্রয়স্থল শিবচর থানা মুক্ত অপারেশন শুরু করেন। প্রায় ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রায় ১৬ ঘণ্টার যুদ্ধে ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে।
এ যুদ্ধে শিবচরের আ. ছালাম, ভাঙ্গার কমান্ডার মোশাররফ হোসেন ,সদরপুরের কমান্ডার দেলোয়ার হোসেন ও সহযোগী ১১ বছর বয়সের শিশু ইস্কান্দারসহ চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধে ১৮ জন পাক হানাদার ও রাজাকার নিহত হন।
যুদ্ধকালীন সাত থানা এরিয়া কমান্ডার ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন খান বলেন, ‘আজ শিবচর মুক্ত দিবস উপলক্ষে শিবচরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মধ্য শিবচর থিয়েটারের পক্ষে বিকাল থেকে সন্ধ্যাব্যাপী উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে।’