এক্সপ্রেসওয়ের ওপরই থামছে বাস, দুর্ঘটনার শঙ্কা

জাতীয় ঢাকা মাদারীপুর শিবচর সারাদেশ

এস.এম.দেলোয়ার হোসাইন:

ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা টোলপ্লাজা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে বাসে উঠে ঢাকা যাচ্ছেন যাত্রীরা। আবার ঢাকা থেকে যারা আসছেন তাদেরও একইভাবে এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থানে নামানো হচ্ছে। যাত্রী ওঠা-নামা করতে বিভিন্ন স্থানের যাত্রী ছাউনির পার্কিংয়ে গাড়ি না থামিয়ে মূল সড়কের ওপর থামানো হচ্ছে। এর ফলে একাধিক গাড়ি থেমে সড়কের অর্ধেক পথ আটকে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার শংকা। ইতোপূর্বে এক্সপ্রেসওয়েতে পেছন থেকে গাড়িকে ধাক্কা দেওয়ার একাধিক ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানী ঢাকা যেতে গতি বেড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মানুষের। নৌপথের দুর্ভোগ না থাকায় দিনে-রাতে যে কোনো সময়ই এখন রাজধানীতে ছুটছেন সাধারণ মানুষেরা। আবার একইভাবে ফিরছেন বাড়িতেও। আগে শিমুলিয়া ঘাট থেকে যে গাড়িগুলো ঢাকা যেত, সেই গাড়িগুলো গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এবং গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর পর্যন্ত যাচ্ছে। ভাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বাসগুলো ভাঙ্গার পর থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা টোলপ্লাজা পর্যন্ত একাধিক স্থান থেকে যাত্রী নিয়ে থাকে। এর মধ্যে ভাঙ্গার মালিগ্রাম, পুলিয়া, শিবচরের সূর্যনগর, পাঁচ্চর উল্লেখযোগ্য। এসব স্থানে যাত্রী তোলা ও নামানোর সময় বাসগুলো মহাসড়কের ওপর যেখানে সেখানে থামাচ্ছে। বিশৃঙ্খলভাবে মহাসড়কে ভিড় করছে একাধিক বাস। ফলে সড়কে চলাচলকারী অন্যান্য গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এবং ব্যক্তিগত গাড়ির চালকেরা।

এক্সপ্রেসওয়েরে বিভিন্ন অংশে ঘুরে দেখা যায়, এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর বাসস্ট্যান্ডে এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকাগামী লেনে বাসগুলো যেখানে সেখানে দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে। যাত্রীছাউনির সামনে গাড়ি পার্কিং অংশে দুই/একটি বাস থাকলেও বেশিরভাগ বাসই সড়কের ওপর থেমে যাত্রী ওঠাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকাগামী সাত/আটটি বাস একসঙ্গে সড়কের ওপর থামছে। ফলে সড়কের একমুখী লেনের বেশিরভাগ অংশ আটকে থাকছে গাড়িতে। সরাসরি ঢাকাগামী কোনো গাড়ি ওই অংশ অতিক্রম করতে গেলে হঠাৎ করেই গতি কমাতে হয়। এছাড়া সড়কের ওপর এভাবে যাত্রীদের তোলা ও নামানোর কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে সাধারণ যাত্রীরা জানান।জানতে চাইলে ঢাকাগামী কয়েকটি বাসের চালক বলেন, যাত্রী তোলা ও নামানোর জন্য যাত্রীছাউনির সামনে বেশি জায়গা নেই। তিন/চারটা গাড়ি সেখানে থাকতে পারে। কিন্তু যাত্রীছাউনি থেকে ঢাকার যাত্রী তুলতে সব বাসেরই প্রতিযোগিতা থাকে। প্রায় একই সঙ্গে ভাঙ্গা বা দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা আট/১০টি বাস পাঁচ্চর যাত্রীছাউনিসহ এক্সপ্রেসওয়ের বেশিরভাগ স্ট্যান্ডে চলে আসে। ফলে যাত্রী পেতে সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড় করানো ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। তাছাড়া আমাদের নিজস্ব কাউন্টার না থাকায় এ সমস্যাটা বেশি হচ্ছে।

ঢাকাগামী পাঁচ্চর এলাকার যাত্রী লিটন খান বলেন, পাঁচ্চর যাত্রীছাউনিতে দাঁড়ালে ঢাকাগামী প্রায় সব বাসই পাওয়া যায়। প্রতিদিন অনেক যাত্রী এখান থেকে বাসে ওঠেন। যাত্রীছাউনির সামনে একসঙ্গে অনেকগুলো গাড়ি থামে। বেশিরভাগ সড়কের ওপরই থামে। এক্ষেত্রে বেশ ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, পেছন থেকে দ্রুতগামী কোনো গাড়ির সঙ্গে ধাক্কাও লাগতে পারে। এ রকম ঘটনা ঘটেছে কয়েকবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে এক্সপ্রেসওয়েতে থেমে থাকা গাড়ির সঙ্গে পেছন থেকে অন্য গাড়ির সংঘর্ষের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যাই বেশি। যাত্রী নামানোর সময় অন্য একটি বাস এসে পেছন থেকে থেমে থাকা বাসকে ধাক্কা দিয়েছে। এতে আহতও হয়েছেন অনেক যাত্রী।

স্থানীয়রা মনে করেন, মূলত সড়কের ওপর যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তোলা ও নামানোয় এ রকম দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

শিবচর হাইওয়ে পুলিশ পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের ওপর বাস রেখে যাত্রী ওঠানামার কারণে আমরা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বাসকে মামলা দিয়েছি। তাদের সব সময় বিষয়টি বলেছি। সচেতন করে যাচ্ছি। তাছাড়া আমাদের হাইওয়ে পুলিশের টিম এক্সপ্রেসওয়েতে সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *