মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুর কালকিনিতে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় এক তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টায় উপজেলার চরদৌলতখান ইউনিয়নের উত্তরকান্দি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ওই তরুণের নাম খায়রুল ইসলাম (২৬)। তিনি উত্তরকান্দি এলাকার লোকমান কবিরাজের ছেলে এবং পেশায় একজন স্যানেটারি মিস্ত্রি।
বিজ্ঞাপন
গত ১২ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন খায়রুল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, খায়রুলের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী শিকারীকান্দি এলাকার এক তরুণীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ১২ আগস্ট রাতে বাসা থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেননি খায়রুল। তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও খায়রুলের কোনো সন্ধান না পেলে পুলিশকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানান। এরপর মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে খায়রুলের বাসা থেকে ২০০ মিটার দূরে একটি পুকুরে তার লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ রাত ১০টার দিকে খায়রুলের লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এদিকে, নিহতের পরিবারের অভিযোগ, খায়রুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে লাশ পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তারা এ ঘটনার সঠিত তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
নিহত খায়রুলের মা মালেকা বেগম বলেন, পাঁচ বছর ধরে পাশের গ্রামের জাকির প্যাদার মেয়ের সঙ্গে আমার বাজানের প্রেম ছিল। এ কারণে জাকির প্যাদা আমাগো সবাইরে হুমকি-ধামকি দিয়ে গেছে। ওরা আমার বাজানরে ডাইকা নিয়ে মাইরা ফালাইছে। আমার বাজানের কোনো দোষ ছিল না। ওরে তোমরা ক্যান মারলা?
নিহতের বোন খাদিজা আক্তার বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা আমার ভাইয়ের হত্যার সঙ্গে জড়িত আমরা তাদের কঠোর বিচার চাই। পুলিশের কাছে অনুরোধ, যেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
জানতে চাইলে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, আমাদের প্রাথমিক ধারণা, ছেলেটি অসুস্থ ছিল। প্রেমের সম্পর্কে ব্যর্থ হয়ে সে বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যাও করতে পারে। আবার নিহতের পরিবারের অভিযোগ, খায়রুলকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আপাতত কোনো কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে হত্যার রহস্যের কারণ জানা যাবে।
ওসি আরও বলেন, ১২ আগস্ট থেকে খায়রুল নিখোঁজ থাকলেও তার পরিবারের সদস্যরা থানায় নিখোঁজের সন্ধান চেয়ে জিডি করেনি। লাশটি সুরতহাল আমরা করেছি। সেখানে নিহত ওই তরুণের শরীরের কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।