মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির অভাবে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে রোপা আমনের। দুশ্চিন্তার অন্ত নেই কৃষকদের। অধিকাংশ কৃষকই বৃষ্টির অভাবে এখনো রোপা আমনের চারা রোপণ করতে পারছে না। রোপা আমনের আশা বাদ দিয়ে আগাম সবজি রোপণ শুরু করতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। এতে উৎকণ্ঠায় সবাই।
সরেজমিন ও প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, কৃষিপ্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলায় বৃষ্টির অভাবে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই কৃষকদের।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) আমবাড়িয়া গ্রামের ফসলের মাঠ পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, অনেকে কোনোভাবে সেচ দিয়ে রোপা আমন লাগিয়ে নিলেও বৃষ্টির অভাবে জমিতে আমনের চারা পানির অভাবে লালচে বর্ণ ধারণ করছে। তারই পাশের কৃষক আব্দুল মান্নান (৫০) জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি চাষ করছেন।
পানি তো নেই এই জমিতে কী লাগাবেন? জানতে চাইলে কৃষক মান্নান জানালেন, কি করবো পাশের জমিতে ধান লাগিয়ে পানি দিতে পারছি না তাই লালচে হয়ে যাচ্ছে। তাই এই জমিতে মূলার বীজ বপন করবো। আগাম সবজিতে অন্তত লাভবান হতে পারব। কিন্তু যদি আবার বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় তখন তো মুলা ক্ষেতও টিকবে না- এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, কী করব ভাই ধান নাইলে মুলা- একটা যদিও টিকে বাঁচার আশা আছে।
এভাবে অনেক কৃষকই এখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। অনেক কৃষক হলুদ হয়ে যাওয়া আমনের বীজতলার দিকে মন খারাপ করে দীর্ঘশ্বাসই ফেলছেন আর কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত না হলে তো এটুকুনও রক্ষা করা দায় হয়ে যাবে। ভেবে পাচ্ছেন না কী করবে।
খৈয়াছরা গ্রামের কৃষক হুমায়ুন মিয়া (৪৫) বলেন, আর কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে রোপণকৃত চারাগুলোতে সেচ দিতে না পারলে টেকানোও যাবে না হয়তো। সবাই তো এই রোপা আমনের পর সবজি লাগায়। অবশেষে ধানের জমিতে সবজি চাষ ছাড়া কোনো গতিই থাকবে না। তাতেও পানির অভাব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, এই সময়ে আমনের প্রায় ৬০ শতাংশ চারা রোপণ হয়ে যায়। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ১০ শতাংশ হয়েছে মাত্র।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, যেসব কৃষি জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণের সুবিধা আছে সেখানে সেচ দিয়ে রোপণের পরামর্শ প্রদান করেছি।
তিনি বলেন, আশা করছি শেষ সময়ে হলেও বৃষ্টিপাত অবশ্যই হবে। তবে প্রকৃতির এমন রুদ্ররূপে তিনি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিহাজুর রহমান বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে আল্লাহর ওপরই ভরসা করা ছাড়া কোনো গতি নেই। বৃষ্টি না হলে কৃষিতে অপূরণীয় ক্ষতি হবে বলে তিনি মনে করেন।