পাট চাষে স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছে কৃষক

অন্যান্য কৃষি

এস.এম.দেলোয়ার হোসাইন, নিজস্ব প্রতিবেদক:

অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো কৃষি প্রণোদনা প্রাপ্তি ও ভালো দাম পাওয়ায় পাট চাষে ঝুঁকছেন মাদারীপুর শিবচর উপজেলার কৃষকেরা। এ বছর ১৪ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে পাটখেতে নিড়ানি ও অন্যান্য পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।

চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। টানা কয়েক বছর সোনালি আঁশের মূল্য ভালো পাওয়ায় পাট চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলে এ বছরও ব্যাপক হারে পাট চাষ করেছেন শিবচরের কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পাটের বাম্পার ফলন ও ভালো দামের স্বপ্ন দেখছেন তারা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে পাট ও ৪৯০ হেক্টর জমিতে মেস্তা জাতীয় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাট ও ৫০০ হেক্টর জমিতে মেস্তা জাতীয় পাট চাষের আবাদ হয়েছিল।

স্থানীয় কৃষকরা বলেন, বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না হওয়ায় খালবিলে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে বিপাকে পড়েন তাঁরা।

উপজেলার বাঁশকান্দি গ্রামের চাষি মোনতাজ উদ্দিন জানান, এবার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় এ মৌসুমের শুরুতে অনেকেই পাটচাষ শুরু করেন।

উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের কৃষক আসান মোড়ল জানান, চৈত্রের শেষ ভাগে পাটের মৌসুম শুরু হয়। বৈশাখে পুরোদমে এর আবাদ হয়। পাট কাটা হয় আষাঢ় ও শ্রাবণে। এ সময় বৃষ্টি বেশি হলে সহজে জাগ দিতে পারেন চাষিরা। এতে ভালো পাট পাওয়া যায়। তবে কোনো কারণে পানির অভাব দেখা দিলে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আরেক কৃষক মুনিরউদ্দীন মাদবর বলেন, কৃষকেরা পাট চাষ করে বিপদে পড়েন। ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় সোনালি আঁশে আগ্রহ হারাচ্ছেন। সেই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিকদের জীবনযাপনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এ ক্ষেত্রে পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিতে ভর্তুকির দাবি জানান তিনি।

চরজানাজাত ইউনিয়নের কৃষক রজব আলী বলেন, এ বছর আমি তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করছি, এ বছরও পাটের ভালো দাম পাব। তবে পাটের ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন।

শিবচর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলার আবহাওয়া পাট চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। এ কারণে প্রতি বছরই এখানে পাটের ফলন ভালো হয়। এবার আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকলে কৃষক ভালো ফলন পাবেন। স্বচ্ছ পানিতে যত্ন সহকারে পাট জাগ দিয়ে সুন্দর পাটের আঁশ উৎপাদন করতে পারলে কৃষকরা বাজারে ভালো দাম পাবে। আমরা কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *